ফেনী-৩ আসনে তৃণমূলের কল্পনায় জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন


আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন আসনে কে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা। তৃণমূলের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হবে তা নিশ্চিত করে বলতে না পারলেও (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) ফেনী-৩ আসনে প্রার্থী হিসেবে কাকে চান তা নিয়ে ব্যপক আলোচনা চলছে এ আসনের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে। (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) ফেনী-৩ আসনে একাধিক প্রার্থী থাকলেও তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থী আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন।
কেন তিনি এ আসনে সবার পছন্দ তা নিয়ে তৃণমূলের কিছু যুক্তি ও তর্ক বিতর্ক চলছে। অনেকে মনে করছেন লিপটন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। যিনি ছোট বেলা থেকে আদর্শে স্বাধীনতার স্বপক্ষের দল আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ থেকে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৮৯ সালে আমিরাবাদ বিসিলাহা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসিতে কুমিল্লা বোর্ডে আর্টস থেকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৯০ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসিতে প্রথম বিভাগে পাশ করার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৯২-১৯৯৩ শিক্ষাবর্ষে সেই সময় থেকেই শিবিরের দুর্গ খ্যাত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলবাদী জামাত বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সামনে সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিতে থাকেন। যার ফলে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে তার সাংগঠনিক দক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে তৎকালীন শাজাহান-কলিম কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহি সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। এরপর সেই আমলেও মৌলবাদী জামাত বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের কারনে একাধিকবার শিবিরের হামলায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর যখন সারাদেশে আওয়ামী লীগের চরম সংকটকাল চলছে তখন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী থাকাবস্থায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাকে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সে সময় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সারাদেশে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটে বিশাল কর্মী গড়ে তোলেন।
এরপর ২০০৬ সালে ছাত্র রাজনীতির পাঠ শেষ করেও রাজনীতি থেকে একদিনের জন্যও দূরে থাকেন নি, সারাদেশেই তার সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। বিশেষ করে তার জন্মস্থান ফেনীর সোনাগাজী ও দাগনভূঞার প্রতিটি পাড়ায় মহল্লায় মানুষের সেবায় কাজ করে জনপ্রিয়তার দিকে থেকে ফেনী-৩ আসনে নিজেকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যান। তিনি ১/১১-তে দলের পক্ষে ভূমিকা, দলে অবদান, আনুগত্য, সাংগঠনিক, ব্যক্তিগত ও পেশাগত যোগ্যতায় নিজেকে যোগ্য ব্যাক্তিত্ত্বে ফুটিয়ে তুলেছেন। 
যার ফলশ্রুতিতে তিনি ২০০৮, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রী শেখহাসিনার কাছে ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভুঞা) আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকে নিষেধ করলে তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কখনোই স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেননি। ইতিমিধ্যে তার দীর্ঘদিনের রাজনীতির অবদান স্বরূপ তাকে দলীয় সভানেত্রী তার সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ কমিটিতে সহ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসায় ফেনীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাজনৈতিক পরিধি বেড়ে যায়। লিপটন দলের একজন দক্ষ সংগঠক হিসাবে ইতিমধ্যে তৃণমূলে কাছে প্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেন। সারা দেশ থেকে ঢাকায় আসা আওয়ামী নেতা, কর্মী, সমর্থকদের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাত দেন এবং তাদের সুখ-দুঃখ বিনিময় করেন। এসব কারণে আগামী নির্বাচনে তৃণমূলের কল্পনায় লিপটনই তাদের নৌকার মনোনীত প্রার্থী।

No comments

Powered by Blogger.