কুমিল্লায় ৪০ মিনিট ব্রীজের রেলিংয়ে ঝুলে শিক্ষার্থীকে প্রাণে বাঁচালো পুলিশ
বালু বোঝাইকারী আন্তঃ জেলায় চলাচলকারী সাধারণ পরিবহনের একটি বড় ট্রাকের চাপায় সাইকেল আরোহী অষ্টম শ্রেনীর স্কুল ছাত্র মারাত্বকভাবে আহত হবার খবর পেয়ে প্রতিবাদ জানাতে এসে একই স্কুলের ৯ম শ্রেনীর অপর এক ছাত্র একই ট্রাকের নিচে চাপা গড়ে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছে।কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদরে বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র ও এলাকাবাসী জানায় উপজেলা সদরের দক্ষিণ বাজারে মেসার্স তালুকদার এন্টারপ্রাইজের একটি বালু ভর্তি ট্রাক যার নাম্বার- ঢাকা মেট্রো-ট-২২-২৯০০ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কুমিল্লা-মীরপুর সড়কের ভিশন হাসপাতালের পূর্বদিকে তাদের দোকানের সামনে রাস্তার পাশে অবস্থান করছিল। এময় ট্রাকের হেলপার রাস্তার উপরেই বিশাল এ ট্রাকটিকে গুড়িয়ে উল্টোদিকে আনার চেষ্টা করার সময় পেছনে ভালভাবে না তাকানোর কারনে সাইকেলসহ একটি ছেলে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে।সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র নগরপাড় গ্রামের জয়দল হোসেনের ছেলে মোঃ হৃদয় (১৪) ট্রাকের চাপায় তার শরীরের নিচের অংশের বাম দিকের হাড় ভেঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়ে মারাত্বকভাবে আহত হয়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা পিজি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এলাকাবাসী ট্রাকটি আটক করলেও ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে থানার এসআই যুযুৎসু চাকমা ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ট্রাকটি আটক করে। হৃদয়ের দূর্ঘটনার খবর পেয়ে লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী দূর্ঘটনার উপযুক্ত বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিস ও থানায় উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জহিরুল হক ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএএম শাহজাহান কবির অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে কঠিন বিচার করা হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস করলে শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়।
এসময় বেশ কিছু শিক্ষার্থী থানার সামনে অবস্থান করছিল। আটককৃত বালু ভর্তি ট্রাকটি থানায় প্রবেশ করার মহুর্তে ব্রীজের উপরে উঠার সময় ব্রীজের উত্তর পাশের এপ্রুসিং দেবে যেয়ে গর্ত হয়ে ব্রীজের রেলিংয়ের সাথে হেলে পড়ে। এসময় একই স্কুলের ৯ম শ্রেনীর ছাত্র সাহেবাবাদ পূর্বপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ ইসরাফিল(১৫) ট্রাক এবং ব্রীজের রেলিংয়ের মাঝখানে চাপা পড়ে।
তাৎক্ষণিক থানার ওসি শাহজাহান কবির জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট ব্রীজের রেলিংয়ে ঝুলে থেকে এলাকাবাসী ও পুলিশবাহিনীর সহযোগীতায় ব্রীজের রেলিং ভেঙ্গে ছাত্রটিকে উদ্ধার করে প্রথমে ব্রাহ্মণপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ও পরে মাইক্রো ভাড়া করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
ইসরাফিলের ডান পায়ের উপরের অংশ ভেঙ্গে গেলে এবং শরীরের নিচের অংশ থেতলিয়ে যাবার কারনে সে মারাত্বভাবে আহত হয়।
থানার ওসি ইসরাফিলের পরিবারের সদস্যদের হাতে তাৎক্ষণিক নগদ ৫ হাজার টাকা তুলে দেন। স্কুলের শিক্ষার্থীদের শান্তনা দিতে ইউএনও, ওসি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা হক পপি, এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সারোয়ার খান স্কুলের বিভিন্ন ক্লাসে যেয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
এসময় ইউএনও আহত শিক্ষার্থীদের সরকারী অনুদান দেবার আশ^াস প্রদান করেন। থানায় ট্রাকটি আটক আছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।
No comments